রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা

রসুন (Garlic) একটি শক্তিশালী ও বহু ঔষধি গুন সম্পন্ন প্রাকৃতিক উপাদান। সুগন্ধ সহ রান্নায় ব্যবহারের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ উপাদান। তবে শুধুমাত্র রান্নার কাজে মসলা হিসেবে প্রয়োগের মধ্যেই এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ নয়। সামগ্রিকভাবেও উপকারিতা রয়েছে অনেক।

মানবদেহে অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে, হাড়, পরিপাকতন্ত্র, চোখ, হার্ট ঠিক রাখতে সাহায্য করে রসুন। একইভাবে হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়রিয়া, এসিডিটি, ডায়াবেটিস, গিট বাত, অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস, শরীরের ফোঁড়া, ঠান্ডা ও জ্বর জনিত রোগ প্রতিরোধে এবং নিরাময়ে রসুনের উপকারিতা রয়েছে। রসুনের সকল উপকারিতার পাশাপাশি রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ক্ষতিকর দিক ও পুষ্টি গুনাগুন নিয়েই আজকের আলোচনা।

প্রতি ১০০ গ্রাম রসুনে রয়েছে-

  • প্রায় ১৫০ ক্যালোরি,
  • ৩৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট,
  • ৬.৩৬ গ্রাম প্রোটিন,
  • ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬,
  • ফোলেট,
  • ভিটামিন সি,
  • ক্যালসিয়াম,
  • আয়রন,
  • ম্যাগনেসিয়াম,
  • ম্যাঙ্গানিজ,
  • ফসফরাস,
  • পটাসিয়াম,
  • সোডিয়াম এবং জিঙ্কের একটি বড় উৎস।

এর প্রতিটি উপাদানই মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয়।

মানবদেহে রসুনের সামগ্রিক উপকারিতা সীমাবদ্ধ নয়। শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গেই এটি পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে উপকারী প্রভাব ফেলে। নিচে রসুনের সকল উপকারিতা গুলো বিস্তারিত আকারে তুলে ধরা হলো:

রসুনের উপকারিতা

(১) প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক রসুন

গবেষণা থেকে জানা যায়, খালি পেটে রসুন খেলে মানবদেহে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে। বিশেষ করে সকালে কোন কিছু খাবার পূর্বে ১/২ কোয়া কাঁচা রসুন খেলে সকল প্রকার ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলে।

আরও জানতে : নারীরা কোন রাশির পুরুষ পছন্দ করে জানেন কি?

(২) রসুন হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে রসুন অত্যন্ত উপকারী। রসুনের কার্ডিওভাসকুলার উপকারিতার জন্য হার্টের স্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে সুস্থতা লাভ করে। এটি ভাসোডিলেশন বা রক্ত চলাচলকে সহজতর করে। এছাড়া যেসকল এনজাইমের ক্রিয়া রক্তনালী গুলোকে সংকুচিত করে সেগুলো বাধা দিয়ে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। রসুন মানবদেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এছাড়া আরও নানাভাবে আমাদের হৃদযন্ত্রের জন্য রসুনের উপকারিতা রয়েছে।

(৩) রসুনের এন্টি-ইনফ্ল্যামাটরি প্রভাব

দীর্ঘস্থায়ী হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সার সহ বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে রসুন। রসুনের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য এই সকল রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

(৪) রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা

রসুনে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিক্যাল গুলোকে আলাদা করতে সাহায্য করে। মানবদেহের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং কোষের ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষায় অবদান রাখে রসুনের এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন না চিবিয়ে গিলে খেলে দিনব্যাপী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

(৫) ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতে রসুন

রসুনে সালফারের যৌগিক পদার্থগুলো, যেমন অ্যালিসিন, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রসুনের এসকল উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যার প্রভাব শরীরকে সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

(৬) ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে রসুন

বর্তমানে কিছু গবেষনা থেকে পরামর্শ দেওয়া হয় থাকে যে, কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে রসুনের উপকারিতা রয়েছে। বিশেষ করে পাচনতন্ত্রের বিভিন্ন ক্যান্সার, যেমন পাকস্থলীতে এবং কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের রোগীদের জন্য রসুন উপকারী। রসুন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে। এমনকি ক্যান্সার কোষের অ্যাপোপটোসিস (কোষের মৃত্যু) ঘটাতেও এই রসুনের প্রভাব রয়েছ।

(৭) মানবদেহকে ডি-টক্সিফাই করতে রসুন

নিয়মিত রসুন খেলে শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয়। এটি শরীর থেকে ভারী ও বর্জ্য ধাতু এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারণে সহায়তা করে। লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোতে চাপ কমাতে রসুন প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রসুন – কৃমি পরিত্রাণ, জিদ, প্যারাসাইট, তীব্র জ্বর, ডায়াবেটিস, বিষণ্ণতা এবং ক্যান্সার এর মত বড় রোগগুলো প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

(৮) হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে রসুন

রসুন নারীদের দেহে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মেনোপজ কালীন সময়ে নিয়মিত রসুন খেলে হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাছাড়া নারী পুরুষ সকলের হাড়ের জন্যই রসুনের উপকারিতা অনেক।

(৯) অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে রসুন

আমাদের খাদ্যনালী থেকে শুরু করে দেহের অভ্যন্তরীণ সামগ্রিক অন্ত্রের ক্রিয়ায় রসুন উপকারী প্রভাব ফেলে। রসুনের প্রিবায়োটিক বৈশিষ্ট্য অন্ত্রের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে। একটি স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের সাথে মাইক্রোবায়োম হজম এবং ইমিউন ফাংশন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ জড়িত। নিয়মিত সঠিক পরিমানে রসুন খেলে এর প্রতিটি-ই উপকৃত হয়। খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে কাজ করে।

(১০) ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় রসুন

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে রসুনের উপকারিতা রয়েছে। কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, রসুন খাওয়া ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে। এর মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত রসুন খেলে ডায়াবেটিস সহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমাতে পারবে।

(১১) অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধে রসুন

Atherosclerosis – হলো ধমনীর প্রাচীরে প্লাক-কোলেস্টেরল, চর্বি-জমা, যা ধমনীকে সংকুচিত করে দেয়।এতে রক্তপ্রবাহ কমে যেতে পারে। রসুনের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং প্লেটলেট একত্রিতকরণকে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। যা এথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধে অবদান রাখে।

আরও জানতে : যে অবস্থায় করতেই হবে ফরজ গোসল

(১২) ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুঘটিত রোগ প্রতিরোধে রসুন

প্রাচীনকাল থেকেই ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুঘটিত রোগ প্রতিরোধে সুন ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমানে গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দেহের বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করতে রসুন খুবই কার্যকর। শিশুদের পেটের কৃমি দূর করতে রসুনের রস ভালো উপকারিতা বহন করে। অন্যদিকে, দাঁতের মাড়িতে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার বন্ধ করতে রসুনের নির্যাস ‘মাউথ ওয়াশ’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

(১৩) ক্ষতস্থান সারিয়ে তুলতে রসুন

শরীরের ক্ষতস্থানে আমরা নানারকম ক্রিম, মলম ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। তবে এক্ষেত্রে সরাসরি প্রাকৃতিক উপাদান রসুন ব্যবহার করতে পারেন। রসুনের কোয়া কেটে নির্যাস শরীরের কাঁটা স্থানে লাগান এবং উপরে ব্যান্ডেজ করে দিন। এভাবে খুব দ্রুত ক্ষতস্থান সেরে উঠতে রসুনের উপকারিতা রয়েছে।

(১৪) চোখের যত্নে রসুন ব্যবহার

নিয়মিত রসুন খেলে চোখের ছানি পড়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এছাড়া চোখের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন টিস্যু সুগঠিত করতেও রসুন উপকারী।

(১৫) ডায়রিয়া প্রতিরোধে রসুনের ব্যবহার

রসুন হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং ক্ষুধা মন্দা দূর করতে কাজ করে। একই সাথে পেটের গুরুতর সমস্যা। – ডায়রিয়া হলে রসুনের ১/২ টি কোয়া খাওয়ার মাধ্যমে উপকার পেতে পারেন। অন্যদিকে খালি পেটে রসুন খেলে স্নায়বিক চাপ কমায় এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করে। পরিপাকতন্ত্রের যত সমস্যা রয়েছে সেগুলোতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রসুন উপকারী।

(১৬) শ্বসনকার্যে রসুন | জমে যাওয়া কফ থেকে মুক্তি পেতে

নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, হুপিং কাশি, ব্রংকাইটিস, হাপানি, ফুসফুসের কনজেশন ইত্যাদি প্রতিরোধে রসুনের উপকারিতা অনেক। এ সকল রোগ আরোগ্য করার মতো প্রাকৃতিক উপাদান রসুনের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। খুব সামান্য তেলে ১/২ কোয়া রসুন ভেজে তাতে ১ টেবিল চামচ মধুর মিশ্রণ করে ঘুমানোর আগে খেয়ে নিন। এতে জমে যাওয়া কফ থেকে মুক্তি পাবেন।

(১৭) যৌবন ধরে রাখতে রসুন

রসুন মানবদেহের শক্তি-সামর্থ্যকে দীর্ঘস্থায়ী করে। শরীরে বয়সের ছাপ দূর করে এবং ত্বকে তারুণ্যের ভাব দেখা যায়। একইসাথে পুরুষের দেহে হরমোন বৃদ্ধি করতে রসুন প্রত্যক্ষভাবে কার্যকরী।

(১৮) গিট বাতের রোগের সমাধানে রসুন

গিট বাতের রোগের ক্ষেত্রে রসুন উপকারী। নিয়মিত ২ কোয়া রসুন খেলে গিটের বাত সেরে যেতে পারে।

(১৯) শরীরের ফোঁড়া সারাতে রসুন

রসুনের রস শরীরের সকল প্রকার পুজ ও ব্যথাযুক্ত ফোঁড়া সারাতে সাহায্য করে। ফোঁড়াযুক্ত স্থানে রসুনের রস লাগিয়ে ১৫ মিনিট পরে শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। এতে অতি দ্রুত নিরাময় হয়। দাদ, খোস পাচড়া ধরনের চর্মরোগ থেকেও রসুনের প্রতিকার পাওয়া যায়।

(২০) ঠান্ডা ও জ্বরে রসুন

শরীর থেকে জ্বর আর ঠান্ডা দূর করতে প্রতিদিন ২/৩ কোয়া রসুন কাঁচা সেবন করুন। এ ছাড়া রান্না করে বা চায়ের সাথেও রসুন খেতে পারেন। নিয়মিত সেবন করলে ঠান্ডা ও জ্বর সাময়িক প্রতিরোধের পাশাপাশি শরীরে অ্যান্টিবডিও তৈরি হবে।

রসুন- এর উপকারিতা এত বেশি হওয়ার কারণেই একে মহৌষধি ভেষজ উৎপাদন বলা হয়।

রান্না করা রসুনের পুষ্টি গুণাগুন অনেকাংশেই কমে যায়। তাই রসুনের সঠিক উপকারিতা পেতে কাঁচা রসুন খাওয়া সর্বোত্তম। কাঁচা রসুন খেলে জ্বর, ঠান্ডা, কাঁশির মত সাধারণ সমস্যা দূরের পাশাপাশি দীর্ঘস্থায়ী ও বড় রোগের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। কাঁচা রসুনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যসমূহ এর সকল গুনাগুন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে।

উপরোক্ত রসুনের সকল উপকারিতার দিকগুলোই কাঁচা রসুনের ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন খালি পেটে ২ কোয়া রসুন খেতে পারেন। রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা।

কাঁচা রসুন অনেক উপকারী হলেও অতিরিক্ত খেলে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। খেয়াল রাখতে হবে, কাঁচা রসুন দিনে ২ কোয়ার বেশি খেলে নানাবিধ সমস্যা হতে পারে।

রসুন শুধু রান্না বা রোগ প্রতিরোধের জন্যই নয় বরং তবে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও উপকারী। নিচে ত্বকের জন্য রসুনের উপকারি দিকগুলো তুলে ধরা হলো:

  • রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র‌্যাডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে, বার্ধক্যের লক্ষণ কমায়।
  • ত্বকের জ্বালা এবং লাল ভাগ দূর করে।
  • ব্রণ ও একজিমা সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়ক।
  • দাদ ও এ জাতীয় সমস্যা দূর করে।
  • দেহের ক্ষত নিরাময় করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
  • রসুনের সালফার কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা ত্বকের দৃঢ়তা বাড়ায়।
  • রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের এক্সফোলিয়েট করে ত্বক সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে।
  • রসুনের নির্যাস ত্বকের কালো দাগকে হালকা করে।
  • ত্বকের অতিরিক্ত তেল অপসারণ করে।

আরও জানতে: জানেন স্বামীর কাছে কি সব গোপন রাখেন বেশিরভাগ স্ত্রী ?

উপরোক্ত উপকারিতা গুলো থাকলেও কিছু মানুষের ক্ষেত্রে রসুন সংবেদনশীল। তাই ব্যবহারের পূর্বে ডাক্তারি পরামর্শ নিন এবং পরীক্ষা করে দেখুন।

রসুনে থাকা পুষ্টি গুণাগুন মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ হার্টের জন্যও উপকারী। আমাদের হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে রসুনের উপকারী প্রভাবগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:

  • রসুন রক্তনালী গুলো শিথিল রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ও হৃদরোগের ঝুকি কমায়।
  • রসুন- রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। HDL Cholesterol বৃদ্ধির পাশাপাশি LDL Cholesterol কমায়, যা হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায় উপযোগী।
  • রসুনে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, তা স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
  • রসুনের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রক্তনালী ও ধমনীতে প্রদর্শন জনিত সমস্যা দূর করে।
  • দেশের সর্বত্র রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে হৃদপিন্ডের কাজকে সহজ করে।
  • রক্তের জমাট বাধা প্রতিরোধ করে যায় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণ।
  • রসুন এন্ডোথেলিয়ামের কার্যকারিতা উন্নত করে।
  • রসুন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা সুস্থ হার্টের জন্য উপযোগী।
  • নিয়মিত রসুন সেবন ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়। যা কার্ডিওভ্যাসকুলার সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।

আরও জানতে : ভুঁড়ি কমানোর সহজ উপায়

সর্বোপরি হৃদপিন্ডের জন্য এটি রসুনের উপকারিতা অনেক বেশি। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে, রসুন আপনার সুষম খাদ্য তালিকার একটি অংশ মাত্র। এটিকে সঠিক পরিমাণে খেলেই উপকার পাওয়া সম্ভব। অন্যথায়, বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

রসুনের উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে সঠিক মাত্রা না মেনে অধিক রসুন সেবন করলে এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। নিচের রসুনের কয়েকটি অপকারিতা তুলে ধরা হলো:

  • রসুন তীব্র গন্ধযুক্ত হয়। এটি অনেকের জন্যই অপ্রীতিকর হয় এবং রসুন সেবনের পর দীর্ঘক্ষণ আমাদের মুখে রসুনের গন্ধ লেগে থাকে।
  • অতিরিক্ত রসুন সেবনের ফলে হজমে সমস্যা, পেট খারাপ, গ্যাস্ট্রিক ও পেটে ফোলাভাব দেখা দেয়।
  • কিছু ব্যক্তির রসূলে এলার্জি থাকে। তাই রসুন খেলে ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি ইত্যাদি হতে পারে।
  • রসুন কিছু ঔষধের সাথে বিরূপ প্রতিক্রিয়া করে। যার ফলে একই সাথে ঔষধ ও রসুন সেবন করলে নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে।
  • অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রবণ ব্যক্তিদের পেটে অম্বল বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • কিছু মানুষের জন্য রসুন সংবেদনশীল বস্তু। এটি খেলে বা স্পর্শ করলে ত্বকে জ্বালাভাব সৃষ্টি হয়।
  • কাঁচা রসুন খেলে বমি বমি ভাব এবং বমিসহ গ্যাস্ট্রিকজনিত অস্বস্তি হতে পারে।
  • রসুন দেহের রক্ত পাতলা করে থাকে। তাই অতিরিক্ত রসুন সেবন করলে অনাকাঙ্ক্ষিত রক্তক্ষরণ হতে পারে।

আরও জানতে: শিয়া সুন্নী এক মসজিদে নামাজের `ভিডিও

রসুন এর নানাবিধ অপকারিতা থাকলেও সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করলে এর উপকারিতা অনেক।

রসুন আমাদের দেহের সকল কার্যাবলীর জন্য একটি সুষম খাদ্য হিসেবে পরিগণিত হয়। উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানা যায় রসুনের রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা। তবে অতিরিক্ত সেবন করলে রসুনের অপকারিতা-ই বেশি। তাছাড়া নির্দিষ্ট রোগের জন্য ও ত্বকের ব্যবহারের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ।

Share This Post
Scroll to Top